অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পাকিস্তানে বন্যার কারণে প্রায় ২৭ হাজার স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে দেশটির ২০ লাখেরও বেশি শিশু তাদের শিক্ষা জীবন থেকে সুবিধা বঞ্চিত অবস্থায় আছে। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা।
জাতিসংঘের শিশু সহায়তা বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, বন্যায় বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে দেশটির বহু এলাকা। ভয়াবহ বন্যা পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে ধ্বংস করার দুই মাসেরও বেশি সময় পর এখন মাত্র স্কুল ভবনগুলো দেখা যাচ্ছে। বন্যার পানি সম্পূর্ণভাবে কমতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে জানায় সংস্থাটি।
সম্প্রতি দেশটির বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ইউনিসেফের শিক্ষা বিষয়ক বৈশ্বিক পরিচালক রবার্ট জেনকিন্স। তিনি জানান, রাতারাতি পাকিস্তানের লাখ লাখ শিশু পরিবারের সদস্য, ঘরবাড়ি, নিরাপত্তা ও তাদের শিক্ষার সুযোগ হারিয়েছে। চরম ট্রমাটাইজড হয়ে গেছে তারা।
জেনকিন্স সতর্ক করে জানান, তারা কখন স্কুলে ফিরতে পারবে সেই অনিশ্চয়তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে অভিভাবকরা। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের বড় স্কুলগুলো বন্ধ ছিল। পাকিস্তানের শিশুরাও স্কুলে যেতে পারেনি। এবার তারা আরও একটি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
পাকিস্তান ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জানান, ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় সারা দেশে ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পড়ায় এক হাজার ৭০০ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। বন্যার পানিতে কমপক্ষে ৮০ হাজার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। তাছাড়া ১২ লাখ গবাদি পশু মারা গেছে এবং ৯৪ লাখ একর ফসলের জমি ডুবে গেছে।
ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানে বন্যার কারণে ৩৫ লাখেরও বেশি শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। স্কুলগুলো যত বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকবে, শিশুদের ঝরে পড়ার ঝুঁকি তত বেশি হবে। তাদের শিশুশ্রমে বাধ্য হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, পাকিস্তানে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক স্কুল বহির্ভূত শিশু রয়েছে যারা মূল জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশ। তাদের বেশির ভাগ শিশুর বয়স মাত্র ৫ থেকে ১৬ বছর। করোনা ভাইরাসের কারণে মার্চ মাসে পুনরায় না খোলা পর্যন্ত পাকিস্তানজুড়ে স্কুলগুলো সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ৬৪ সপ্তাহের জন্য বন্ধ ছিল।
পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে ৫০০টিরও বেশি অস্থায়ী শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন এবং শিক্ষক ও শিশুদের শিক্ষাদানে সহায়তা করছে ইউনিসেফ।
Leave a Reply